আকরাম জাহিদ তার সম্পূর্ণ নাম আকরাম হোসিন জাহিদ। আকরাম জাহিদ নামেই বেশি পরিচিত। আকরাম জাহিদ একুবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের একজন বাংলাদেশী বাঙ্গালী চিত্রশিল্পী। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন‌। তিনি ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার লোহাইড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন কৃষক ও মাতা একজন গৃহিণী। আকরাম জাহিদ ২০০১ সালে এসএসসি পাশ করে মুকসুদপুর কলেজে ভর্তি হন সেখানে আশানুরূপ ফল না পেয়ে ২০০৭ সালে চারুশিক্ষা অধ্যায়নের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং সেখানে প্রাক বিএফএ সম্পন্ন করে বিএফএ (অনার্স ) ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগে পড়াশোনা করেন।

কাজ আকরাম জাহিদ চারুকলা ইনস্টিটিউটে অধ্যায়নের সময় প্রচুর আউটডোর স্টাডি করতেন। সাধারণত ক্লাস শেষ করে নারায়ণগঞ্জ শহীদ মিনার , নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ও বন্দর ছিল তার আউটডোর স্টাডির অন্যতম স্থান। মাঝেমাঝে স্টাডি ভিন্নতার জন্য কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ও ছবি আঁকতেন। এ সকল স্থানে সাধারণত ফিগার ড্রইং স্টাডি করতেন। ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বেবিয়ে ঢাকা জেলার সাভার নবীনগরে তার বাবার কাছে চলে আসেন। সেখানে সময় পেলেই তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে ড্রইং করতেন। ফাঁকে ফাঁকে তিনি চাকরি খুঁজতেন। কোথাও চাকরি না পেয়ে বেকারত্বের জঞ্জালে বাবার বাসা ছেড়ে ফের ঢাকা চলে আসেন। এবং তিনি তার সমস্ত পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ফেরি করে মানুষের প্রতিকৃতি এঁকে বিক্রি করা শুরু করেন। সেখানে তিনি দেড় বছরের অধিক সময় প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষের মুখচ্ছবি একে বিক্রি করেছেন। এসময়ে রেলওয়ের একদল অসাধু রাজনৈতিক কর্মীরা হঠাৎ তাকে গুম যায়, এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের সহায়তায় তাদের রক্ষা পান। সপ্তাহ খানেক পর তাদের সাথে ঝগড়া করে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি রেলওয়ে স্টেশনে ছবি আঁকা ছেড়ে দিয়ে ঢাকা থেকে তার গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন।

চকরি আকরাম জাহিদ ছাত্র থাকা অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ আদর্শ শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খন্ডকালিন শিক্ষকতা করতেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত হবার সময় চাকরি রিজাইন দিয়ে ঢাকা আসেন।