মকর সংক্রান্তি

থা আছে বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ , আর তেরো পার্বণের মধ্যে অন্যতম পার্বণ হলো মকর সংক্রান্তি উত্তরায়ন ও পৌষ সংক্রান্তি। 'মকরসংক্রান্তি' শব্দটি দিয়ে নিজ কক্ষপথ থেকে সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশ করাকে মকর সংক্রান্তি বলা হয়ে থাকে। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী 'সংক্রান্তি' একটি সংস্কৃত শব্দ। আর এই মকর সংক্রান্তি হলো বাঙালি সমাজ সংস্কৃতির একটি বিশেষ উৎসবের দিন। পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশ জুড়েই বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই মকর সংক্রান্তি উৎসব পালন করা হয়। তবে পৌষ মাসের এই উৎসব আসলে ফসলের উৎসব। পশ্চিমবাংলায় অগ্রহায়ণ মাসে ধান কাটার পর সেই নতুন ধানের চালের আটা দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠে-পুলি তৈরী করে খাওয়া হয়। বাঙালিদের কাছে পৌষ পার্বনের উদেশ্যই হল ঘরে-ঘরে ফসলের দেবী লক্ষীর পুজোর মাধ্যমে পৌষ পার্বণ আর খাওয়া-দাওয়া। পৌষ সংক্রান্তি মানেই বাঙালির ঘরে-ঘরে পিঠেপুলির আয়োজন, সমস্ত ঘর বাড়ি লেপে মুছে সুন্দর করে আলপনা দেওয়া হয়। এই দিনে পুণ্যস্নান এই উৎসবের একটা প্রধান অঙ্গ। পুণ্যার্থীরা গঙ্গা নদী বা অন্য কোনো নদীতে স্নান করে পুণ্য অর্জন করেন। গঙ্গাস্নানের জন্য সকাল থেকে ঘাটে হাজার-হাজার পুণ্যার্থীর ভিড় জমতে থাকে। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় মেলা, নাম সংকীর্তন হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সেখানে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগম হয়। এবছর করোনার তৃতীয় ঢেউর কারণে সেই রকম ভক্তের সমাগম ঘটেনি। একই দিনে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাসাগর এলাকায় দেবী গঙ্গা ও বাবা কপিলমুনি নাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান হয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মতো লাখ লাখ ভক্তের সমাগম হয়। ইচ্ছা থাকে সকলের কিন্তু আর্থিক দিক দিয়ে কিম্বা বয়সের দিক দিয়ে নানান রকম অসুবিধা থাকায় সেই গঙ্গাসাগর গিয়ে পূর্ণস্নান করা হয় না এমন বহু ভক্তের। তাই তারা সেই গঙ্গাসাগরকে একেবারে হাতের কাছে পেয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর তীরবর্তী গঙ্গাসাগর এলাকার মানুষ জন। এখানে কয়েক হাজার মানুষ জনের সমাগম হয় এই গঙ্গাস্নানকে কেন্দ্র করে তিন দিন বসে বিশাল মেলা (কপিলমুনি মেলা)।

[1]

  1. ^ "Bivash Kumar Mahato". www.facebook.com. Retrieved 2022-01-24.